বিস্তারিত পড়ুন»»
সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ, যা কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার অন্তর্গত। এটি কক্সবাজার জেলা থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে, বঙ্গোপসাগরের বুকে অবস্থিত। এই ছোট দ্বীপটি প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। পরিষ্কার নীল জল, সাদা বালির সমুদ্র সৈকত এবং প্রবাল পাথরের অপূর্ব দৃশ্য সেন্টমার্টিনকে পর্যটকদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্যে পরিণত করেছে।
সেন্টমার্টিন ভ্রমণে কিভাবে যাবেনঃ
সেন্টমার্টিনে যেতে হলে বাংলাদেশের যে কোন জায়গা থেকে প্রথমে আপনাকে কক্সবাজার বা টেকনাফ যেতে হবে। ঢাকা থেকে বাস বা ট্রেনে করে প্রথমে যেতে পারেন কক্সবাজার বা টেকনাফ। কক্সবাজার থেকে টেকনাফের দূরত্ব প্রায় ৮০ কিলোমিটার আর কক্সবাজার থেকে বাস, মাইক্রোবাস বা প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে টেকনাফ পৌঁছাতে হবে। আর ঢাকা থেকে সরাসরি বাসে যেতে পারেন টেকনাফ।
শিপ বা জাহাজে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনঃ টেকনাফের দমদমিয়া ঘাট থেকে প্রতিদিন পর্যটকদের জন্য জাহাজ ব্যবস্থা থাকে। জাহাজে ২-৩ ঘণ্টা মতো সময় লাগে।
ট্রলার বা স্পিডবোটঃ টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে পৌঁছাতে ট্রলার বা স্পিডবোট ব্যবহার করতে পারেন। স্পিডবোটে যেতে প্রায় ১ থেকে ১.৫ ঘণ্টা সময় লাগবে। আর ট্রলারে যেতে প্রায় ৩ ঘণ্টা লাগবে। তবে সেন্টমার্টিন যেতে হলে আবহাওয়া ভাল থাকতে হবে, কারণ উত্তাল সমুদ্রে ট্রলার বা স্পিডবোট চলাচলে সমস্যা হতে পারে।
অল্প টাকায় সেন্টমার্টিন ভ্রমণ প্যাকেজ হ্যাপি ট্রাভেলার্স HTG গ্রুপের সাথে।
যাত্রার সময়ঃ
সেন্টমার্টিন যেতে ভালো সময় হলো নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস। এই সময়ে আবহাওয়া শান্ত এবং কম বৃষ্টি থাকে, যা ভ্রমণের জন্য আদর্শ সময়।
----------------------------------
সেন্টমার্টিন ভ্রমণে যা যা দেখতে পারবেনঃ
ছেঁড়া দ্বীপঃ
এটি সেন্টমার্টিন দ্বীপের শেষ প্রান্তে অবস্থিত এবং খুবই মনোরম। এখানকার কোরাল ও সৈকতের নীলাভ পানির জন্য পরিচিত। ছেঁড়া দ্বীপে সাইকেল বা ছোট নৌকা নিয়ে ভ্রমণ করা যায়।
নীল দিগন্ত রিসোর্ট ও বিচঃ
এই রিসোর্টের আশেপাশের বিচ এলাকাটি বেশ নির্জন এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার জন্য এটি উপযুক্ত স্থান।
সেন্টমার্টিন কোরাল বিচঃ
সেন্টমার্টিনে নানা ধরনের কোরাল বা প্রবাল দেখতে পাওয়া যায়, যা এর মূল আকর্ষণ। কোরালের প্রাকৃতিক রঙ ও পানির নীলা রঙ সত্যিই মুগ্ধকর।
নারিকেল জিঞ্জিরাঃ
এটি সেন্টমার্টিন দ্বীপের একটি স্থানীয় নাম, যেখানে প্রচুর নারিকেল গাছ রয়েছে। নারিকেল জল পান করার পাশাপাশি গাছের সারি উপভোগ করতে পারেন।
সামুদ্রিক মাছ ও খাবারের দোকানঃ
সেন্টমার্টিনে প্রচুর রেস্তোরাঁ এবং ছোট খাবারের দোকান রয়েছে যেখানে স্থানীয় সামুদ্রিক মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়া ইত্যাদি পাওয়া যায়।
ডলফিন দেখাঃ
যাত্রাপথে কখনও কখনও ডলফিন দেখা যায়। এটি এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। ডলফিনের খেলা দেখতে চাইলে ট্রলার বা স্পিডবোট ভাড়া নিয়ে সাগরে যেতে পারেন।
রাতের তারার আলোতে সৈকতঃ
রাতে তারাভরা আকাশের নিচে সাগরপাড়ে বসে থাকার অভিজ্ঞতা এককথায় অসাধারণ। যদি পূর্ণিমার রাতে যান, সাগরের ঢেউ আর চাঁদের আলো এক মনোরম পরিবেশ তৈরি করে।
----------------------------------
সেন্টমার্টিনে থাকার বিষয়ঃ
সেন্টমার্টিনে থাকার জন্য বিভিন্ন মানের হোটেল এবং রিসোর্ট রয়েছে। কিছু হোটেল সমুদ্রের একেবারে কাছে, যা আপনাকে সমুদ্রের শব্দের সাথে ঘুমানোর অভিজ্ঞতা দেবে।
কিছু দরকারি টিপসঃ
দ্বীপে বিদ্যুৎ সরবরাহ সীমিত, তাই ফোন বা ক্যামেরার ব্যাটারি চার্জ করে রাখতে হবে। পরিবেশ সুরক্ষার জন্য দ্বীপে প্লাস্টিকের ব্যবহার এড়িয়ে চলুন এবং ময়লা-আবর্জনা সঠিকভাবে নিষ্পত্তি করুন, পরিবেশ নষ্ট করা থেকে বিরত থাকুন।
0 মন্তব্য